হত্যা মামলায় সাবেক সহকারী পুলিশ কমিশনার তানজিল আহমদ, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান ও এসআই শাহাদাত হোসেনের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। যাত্রাবাড়ীতে ছাত্র-জনতার মিছিলে নির্বিচারে গুলিবর্ষণের ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তার ছেলে ইমাম হাসান তাইম হত্যার অভিযোগে তাদের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার, ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াকের আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক মো. রমিজুল হক ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালতে উপস্থিত হয়ে রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। তবে আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
এ সময় আসামি তানজিল আহমদ আদালতে কথা বলেন। তিনি জানান, তিনি যাত্রাবাড়ীতে দুই মাস আগে পোস্টিং পেয়েছিলেন এবং পূর্বে ট্রাফিক পুলিশ এসি ছিলেন। তিনি বলেন, “আমার কোন ধারণা নেই এই ঘটনার ব্যাপারে।” পরে আদালত তাদের ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
এ ঘটনায়, রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের উপ-পরিদর্শক মো. ময়নাল হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে ইমাম হাসান তাইম, যিনি নারায়ণগঞ্জ সরকারি আদমজী নগর এমডব্লিউ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন, গত ২০ আগস্ট নিহত হন। তার মা মোসা. পারভীন আক্তার এ বিষয়ে মামলা করেন।
মামলায় তৎকালীন ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, এডিসি শাকিল মোহাম্মদ শামীম, এসি তানজিল আহমেদ, যাত্রাবাড়ী থানার ওসি (তদন্ত) জাকির হোসেন এবং এসআই শাহাদাৎ আলীসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয় যে, ২০ জুলাই সরকার কারফিউ জারি করে, তবে দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত শিথিল ছিল। ওই সময় ইমাম হাসান তাইম তার দুই বন্ধুর সঙ্গে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় চা খেতে যায়, সেখানে কিছু কোটা আন্দোলনকারী বিক্ষোভ করছিল। ইকবাল হোসেন, শামীম ও তানজিল আহমেদের নির্দেশে, জাকির হোসেন ও তার সঙ্গীরা বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট এবং গুলি চালায়। ছাত্ররা প্রাণ ভয়ে ছোটাছুটি করতে থাকে এবং তাইম ও তার বন্ধুরা চা স্টোরের ভেতর ঢুকে দোকানের সাটার নামিয়ে দেয়। তবে সাটারের নিচে কিছুটা ফাঁকা ছিল। পুলিশ সেখান থেকে তাদের টেনে বের করে, এবং জাকির হোসেন তাইমকে গুলি করে। তাইম পরে বিনা চিকিৎসায় মারা যায়।