জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) স্নাতক সম্মান ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে এক শিক্ষক এবং তার স্ত্রীর সঙ্গে বিএনসিসি ক্যাডেটের মধ্যে তর্ক-বিতর্কের ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম প্রান্তিক।
১০ ফেব্রুয়ারি সোমবার, ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার শেষ শিফটের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদে ঘটনাটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পরীক্ষা চলাকালীন এক নারী পরিচয় না দিয়ে সমাজবিজ্ঞান অনুষদে প্রবেশ করতে চাইলে একজন বিএনসিসি ক্যাডেট তাকে বাধা দেন। পরীক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ছাড়া প্রবেশ নিষেধ জানানো হলে, ওই নারী ক্যাডেটের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং জোরপূর্বক ভেতরে প্রবেশ করেন। পরে তিনি তার স্বামী অধ্যাপক নজরুল ইসলাম প্রান্তিককে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসেন। অধ্যাপক এসে ক্যাডেটের সঙ্গে অসদাচরণ করেন এবং ছাত্রত্ব বাতিলের হুমকি দেন।
এ ঘটনায় বিএনসিসি প্লাটুন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক শামসুল আলমের কাছে অভিযোগ জানালে, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা না নেওয়ার পর তিনি অভিযুক্ত শিক্ষক ও তার স্ত্রীর পক্ষে অবস্থান নেন এবং বিএনসিসি সদস্যদের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকতে বলেন। এর ফলস্বরূপ, বিএনসিসি জাহাঙ্গীরনগর প্লাটুন ভর্তি পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে ‘ওয়াক আউট’ করে পরীক্ষা কেন্দ্র ছেড়ে চলে যায়।
ভুক্তভোগী গ্রাউন্ড কমান্ডার সাবিকুন নাহার জানান, “সমাজবিজ্ঞান অনুষদে পরীক্ষা চলাকালীন এক অপরিচিত নারী প্রবেশ করতে চাইলে আমরা তার পরিচয় জানতে চাই। তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘তোমার সাথে কোনো কথাই বলব না,’ এবং জোরপূর্বক প্রবেশ করেন। কিছুক্ষণ পর তিনি তার স্বামীকে নিয়ে আসেন, যিনি নিজেকে শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি এসে আমাকে ধমক দেন এবং বলেন, ‘তুমি শিক্ষকের স্ত্রীকে চিনবে না কেন?’ এবং ছাত্রত্ব বাতিলের হুমকি দেন।”
অভিযুক্ত অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম প্রান্তিক জানান, “আমি ছাত্রবান্ধব শিক্ষক এবং এই ধরনের মন্তব্য আমি কখনো করিনি। ঘটনাস্থলে বিএনসিসি সদস্য আমার স্ত্রীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে, কিন্তু আমি কখনোই ছাত্রত্ব বাতিলের কথা বলিনি। আমি শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কখনো অসদাচরণ করি না।”
বিএনসিসি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্লাটুন ইনচার্জ সাদমান বলেন, “আমরা যখন অভিযোগ জানিয়েছিলাম, তখন ডিন স্যার কোনো ব্যবস্থা নেননি। এরপর আমরা ‘ওয়াক আউট’ করে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকি। পরবর্তীতে আমরা প্রক্টর স্যারের সঙ্গে আলোচনা করি। আমাদের দাবি, অভিযুক্ত শিক্ষক এবং তার স্ত্রীর পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চাওয়া উচিত।”
বিএনসিসির ‘ওয়াক আউট’-এর পর ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনায় প্রশাসনকে বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয়।