গাজা উপত্যকায় হামাসকে দমন ও জিম্মিদের মুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে ‘ব্যাপক স্থল অভিযান’ শুরু করেছে ইসরায়েল। রবিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই অভিযানের ঘোষণা দেয়, যা গাজার উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলে একযোগে চালানো হচ্ছে। অভিযানে সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংস ও একাধিক হামাস সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।
এই অভিযানের ঘোষণার কিছুক্ষণ পরই গাজা থেকে ইসরায়েল লক্ষ্য করে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার খবর পাওয়া গেছে। ইসরায়েলি বাহিনী জানিয়েছে, একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা সম্ভব হলেও অন্যটি খোলা জায়গায় আঘাত হানে।
এদিকে অভিযান শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাসের সঙ্গে সম্ভাব্য সমঝোতার ইঙ্গিত দেন। নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে জানানো হয়, দোহায় অবস্থানরত আলোচনা দল একটি সম্ভাব্য চুক্তি বাস্তবায়নে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আলোচনার মূল এজেন্ডায় রয়েছে জিম্মি মুক্তি, হামাসের যোদ্ধাদের গাজা থেকে নির্বাসন এবং অঞ্চলটির নিরস্ত্রীকরণ।
তবে চুক্তির সম্ভাবনা থাকলেও বাস্তবে যুদ্ধ থামানোর ক্ষেত্রে মতবিরোধ এখনো প্রবল। নেতানিয়াহু যুদ্ধ শেষ করতে চান না হামাসকে পুরোপুরি পরাজিত না করে, অন্যদিকে হামাস অস্ত্র সমর্পণ বা পরাজয় মেনে নেওয়ার পক্ষে নয়।
হামাসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দোহায় আলোচনা ‘কোনো পূর্বশর্ত ছাড়া’ শুরু হয়েছে। কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এই আলোচনা চলছে, যদিও এখনো কার্যকর সমঝোতা হয়নি।
২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলায় ইসরায়েলে প্রাণ হারায় ১,২১৮ জন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। ওই হামলায় ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়, যাদের মধ্যে এখনও ৫৭ জন গাজায় অবস্থান করছেন।
অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া নতুন ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৩,১৯৩ জন। ফলে সামগ্রিকভাবে এ যুদ্ধের প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৩,৩৩৯ জনে।
এই নতুন অভিযানে আবারও বাড়তে পারে হতাহতের সংখ্যা, এমনটাই আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। যুদ্ধ থামাতে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়লেও, পরিস্থিতির উন্নতির কোনো আভাস এখনো নেই।